শুক্রবার, ২৫ মে, ২০১২

খাৎনা বা মুসলমানীঃ গুরুত্ব, প্রয়োজনীয়তা ও আনুসঙ্গিক

খাৎনা বা মুসলমানী আমাদের মতো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে একটি অতি নিয়মিত ঘটনা। এই পোস্টটিতে নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে খাৎনাকে বিশ্লেষণ করা হবে।
পুরুষাঙ্গের সামনের বা মাথার দিকে যে অতিরিক্ত স্কীন পুরুষাঙ্গের সংবেদনশীল মাথাকে ঢেকে রাখে সেই চামড়া কর্তন করাকে খাৎনা বা মুসলমানী বলে। সাধারণত মুসলমান, ইহুদি ও খ্রীস্টান পুরুষেরা খাৎনা করে থাকে।


খাৎনার প্রয়োজনীয়তাঃ
(ক) ধর্মীয় কারণে মুসলমান ও খ্রীষ্টানরা খৎনা করিয়ে থাকে।
(খ) ফাইমোসিস বা প্যারা ফাইমোসিস রোগ হলে খাৎনা বা মুসলমানী করাতে হয়।
 ফাইমোসিস হলো পুরুষাঙ্গের মাথার দিকের চামড়া যদি এমনভাবে মুত্রনালীকে ঢেকে রাখে যে বাচ্চা বা রোগীর প্রশ্রাবের সময় মাথাটা ফুলে উঠে। এই ভাবে বেশিদিন চলতে থাকলে প্রশ্রাবে ইনফেকশন ও কিডনি ফেইলিওর হতে পারে।প্যারা ফাইমোসিস রোগ হলে  পুরুষাঙ্গের মাথার দিকের চামড়া উল্টে টাইট হয়ে যায়, যার ফলে চামড়াটাকে আর সামনে ও পিছনের দিকে নাড়াচাড়া করা যায় না। এক্ষেত্রে মাথার দিকে ফুলে যায় এবং রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। এই উভয় ক্ষেত্রেই জরুরী ভিত্তিতে খাৎনা করা প্রয়োজন। 

(গ)আরো নানাবিধ কারণে খাৎনা দরকার হয় যেমন-পুরুষাঙ্গের চামড়া অনেক সময় পেন্টের চেইনের সাথে আটকে গেলে। রোগী চাইলেও যে কোন ধর্মাবলম্বী লোকের খৎনা করা হয়।


খাৎনা করানোর বয়সঃ
যতো কম বয়সে খাৎনা করানো হবে, ততোই মঙ্গল। অধিক বয়সে খাৎনা করালে নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে। বয়ঃপ্রাপ্তির পূর্বেই খাৎনা করাতে হবে। অন্যথায় লিঙ্গোত্থানের ফলে ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে।
আমাদের দেশে সাধারণত প্রাথমিক স্কুল পর্যায়ে বালকদের খাৎনা করা হয়। আরবের মুসলিম দেশগুলোতে দুই-তিন বছর বয়সেই অধিকাংশ ছেলেদের খাৎনা সম্পন্ন করা হয়।


খাৎনা বা মুসলমানী করালে কি উপকারীতা:
(ক) পুরাষাঙ্গের ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায়। পুরুষাঙ্গের ক্যান্সার মুসলমান ও খ্রীষ্টানদের মধ্যে নাই বললেই চলে। তার প্রধান কারণ খাৎনা। পুরুষাঙ্গের মাথার বাড়তি চামড়ার নীচে সাদা এক ধরনের পদার্থ (স্মেগমা) জমে এবং এই স্মেগমাই পুরুষাঙ্গের ক্যান্সার এর জন্য দায়ী।
(খ) যৌন রোগের বিস্তার প্রতিরোধ করা যায়। মুসলমানী করা পুরুষের স্ত্রীর দ্বারা যৌন রোগে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
(গ) পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে সুবিধা হয়। পুরুষাঙ্গের অগ্রত্বকের নিচে সাদা পদার্থ জমে দুর্গন্ধ হয়, স্ত্রী সহবাসের সময় স্ত্রীর যোনিরস প্রবেশ করে পরবর্তীতে যন্ত্রণার সৃষ্টি করে। মুসলমানী করা পুরুষের এসমস্ত অসুবিধা নাই।


কখন খাৎনা করা যাবে না: 
হাইপোষ- পেডিয়াসিস রোগ। এটা পুরুষাঙ্গের জন্মগত ত্রুটি। এখানে মনে হবে বাচ্চা জন্মগতভাবে খাৎনা হয়ে এসেছে। এই ক্ষেত্রে পুরুষাঙ্গের বাড়তি চামড়া এই জন্মগত ক্রটি মেরামতের সময় প্রয়োজন হয়। তাই খাৎনা করানো নিষেধ।


দাম্পত্য জীবনে খাৎনা বা মুসলমানীর প্রভাবঃ
যেহেতু পুরুষাঙ্গ দাম্পত্য জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, তাই দাম্পত্য জীবনে খাৎনা বা মুসলমানীর প্রভাব অনেক।  


পুরুষাঙ্গের মাথা খুব সংবেদনশীল। স্ত্রীসহবাসের সময় একজন খাৎনা করা পুরুষ স্ত্রীযোনির স্পর্শে মাত্রাতিরিক্ত শিহরণ অনুভব করে, যা থেকে একজন অমুসলিম পুরুষ সারা জীবন বঞ্চিত থাকে। আবার খাৎনা করার ফলে পুরুষাঙ্গের অগ্রভাগের গভীর রিং-এর মতো খাঁজটি চামড়া নিচ থেকে উন্মুক্ত হয়ে যায়। সহবাসের সময় এই গভীর ভাঁজের ঘর্ষণে স্ত্রী অত্যন্ত পুলক অনুভব করে যা শুধুমাত্র একজন মুসলমানী কুরা পুরুষের স্ত্রীই অনুভব করতে পারে।
অনেক অমুসলিম পুরুষই স্ত্রীকে এই তৃপ্তি দিতে পুরুষাঙ্গের চামড়া গোড়ার দিকে টেনে ধরে অগ্রভাগের খাঁজটি উন্মুক্ত করে সহবাস করে, যা পুরুষাঙ্গে ব্যথার অনুভূতি সৃষ্টি করে। 
সুতরাং খাৎনার দ্বারা নারী-পুরুষ উভয়েরই দাম্পত্য সুখ বহুগুণে বেড়ে যায়। কিন্তু গর্ভাবস্থায় পুরুষাঙ্গের স্পর্শকাতর অগ্রভাগ উন্মুক্ত থাকলে ভ্রুণের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় তা চামড়া আবৃত থাকে। পরে ইসলামে এই চামড়া কেটে ফেলার বিধান দেওয়া হয়েছে, যাতে বান্দা প্রকৃত সুখ পেতে পারে। এখানেই আল্লাহর অপার মহিমার পরিচয়।


সঙ্গী খুঁজে পেতে খাৎনার ভূমিকাঃ
স্ত্রীর জন্য সহবাসের আনন্দে স্বামীর পুরুষাঙ্গের আকার তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়, যদিও অপেক্ষাকৃত বড় পুরুষাঙ্গ স্ত্রীকে একটি ভরাট অনুভূতি দেয়, যা তৃপ্তিদায়ক। কিন্তু স্বামীর যৌন সুখ নিজের পুরুষাঙ্গের আকারের উপর অনেকাংশে নির্ভর করে। সহবাসের সময় স্ত্রীর গুপ্তস্থান আর্দ্র হয়ে উঠে এবং নারীর যোনি নিঃস্পৃত এই রসে কামরস নামক পুরুষাঙ্গের জন্য তৃপ্তিদায়ক একপ্রকার থকথকে পদার্থ থাকে। স্বামী সহবাসে আনন্দ পায় মূলত পুরুষাঙ্গে এই রসের স্পর্শে।
কিন্তু সকল নারীর যোনিরসে কামরসের পরিমাণ সমান থাকে না। যে সব নারীর মাসিক ঋতুস্রাব বেশি সময় স্থায়ী হয়, তাদের যোনিরসে কামরসের পরিমাণ প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর কমে যায়।
পুরুষ নিজের পুরুষাঙ্গের আকার সম্পর্কে সঠিক ধারণা করতে পারে না, যেহেতু তুলনা করার মতো অন্য কোন পুরুষাং সে দেখে নাই। খাৎনা করার মাধ্যমে সে এই সম্বন্ধে একটি ধারণা পেতে পারে। প্রায় সকল পুরুষের লিঙ্গের অগ্রভাগ বা লিঙ্গমুণ্ডের আকৃতি সমান (প্রায় তিন আঙ্গুল)| যদি পুরুষের পুরুষাঙ্গ উত্তেজিত (মিলনের জন্য প্রস্তুত) অবস্থায় গোড়ার দৈর্ঘ্য লিঙ্গমুণ্ডের দৈর্ঘ্যের চাইতে কম হয়, অর্থাৎ মুণ্ডিটি পুরুষাঙ্গের অর্ধেকের চাইতে বেশি হয়, তাহলে পুরুষাঙ্গ হ্রস্বাকৃতির। যে কোন প্রকার যোনিরসে এই পুরুষ আনন্দ পাবে, তবে স্ত্রীর ঋতুস্রাব খুব কম দিন স্থায়ী হলে যোনিরসে কামরসের ঘনত্ব বেশি হওয়ায় অধিক শিহরণ সহ্য করা স্বামীর জন্য কঠিন হতে পারে। এক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবে সহবাসের (স্ত্রী চিৎ হয়ে শয়ন ও স্বামী তার উপর উপুর হয়ে গমন) পরিবর্তে চতুষ্পদ প্রাণীর মতো পাশাপাশি সহবাস করলে উভয়ের অধিক আনন্দ হবে।
যদি পুরুষাঙ্গের গোড়া মুণ্ডির সমান বা প্রায় সমান হয়, তাহলে পুরুষাঙ্গ স্বাভাবিকাকৃতির। সকল প্রকার স্ত্রী এদের তৃপ্ত করতে পারে। তবে অধিক ঋতুস্রাব সম্পন্ন স্ত্রী হলে এই স্বামী কম তৃপ্তি এবং স্বল্প ঋতুবতী অধিক কামরস সম্পন্না স্ত্রী হলে অত্যধিক তৃপ্তি ঘটে।
যদি পুরুষাঙ্গের গোড়া মুণ্ডি অপেক্ষা দীর্ঘ হয়, তাহলে পুরুষাঙ্গ দীর্ঘাকৃতির। স্বল্প ঋতুবতী অধিক কামরস সম্পন্না স্ত্রী দ্বারা এই স্বামীর সঠিক সুখ বোধ হয়। স্ত্রীর স্রাব অধিক হয়ে যোনিরসে কামরসের পরিমাণ কম হলে স্ত্রী এই স্বামীকে
তৃপ্ত করতে পারে না, এক্ষেত্রে স্বাভাবিক সহবাসের পরিবর্তে স্ত্রীর উচিৎ স্বামীকে চিৎ করে শয়ন করিয়ে নিজে তার উপর উপুর হয়ে কোমর চালনা করে সহবাস করা। এভাবে স্বল্প কামরস নিয়েও স্বামীকে অধিক আনন্দ দিতে পারবে।
কিছু পুরুষের মুন্ডির তলনায় গোড়ার দৈর্ঘ্য দ্বিগুণ বা তার থেকেও বেশি হয়, এদের বলে অশ্বাকৃতির পুরুষাঙ্গ। রমণীরা এদের সাথে সহবাসে আগ্রহী হয়, কারণ এই পুরুষ অধিক কামুক হয় বিধায় রমণীর সর্বপ্রকার যৌন বাসনা পূরণ করতে সমর্থ হয়। কিন্তু এই স্বামীকে তৃপ্ত করা সকল স্ত্রীর পক্ষে সম্ভবপর হয় না। এমনকি স্বল্প ঋতুবতী অধিক কামরস সম্পন্না স্ত্রীও তাকে সর্বদা সন্তুষ্ট করতে পারে না। স্বামী এরূপ হলে স্ত্রীর উচিৎ স্বামীকে চিৎ করে শয়ন করিয়ে নিজে তার উপর উপগত হয়ে কোমর চালনা করে সহবাস করা। যদিও পুরুষ নিজের আধিপত্য প্রকাশ করতে সব সময় স্ত্রীর উপরে উঠে সহবাসে আগ্রহী থাকে, তথাপি এই বিপরীত বিহার ছাড়া এই ক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ সন্তুষ্টি সম্ভবপর নয়।
খাৎনা বা মুসলমানী এরূপ নিজের উপযুক্ত সঙ্গী খুঁজে পেতে এবং বিবাহের পর সর্বাধিক আনন্দ লাভের পন্থা নির্ধারণে সহায়তা করে।




খাৎনা না করার কুফলঃ
খাৎনা না করলে একজন মুসলমান পুরুষের ধর্মীয় বিভিন্ন বিধি বিধান মেনে চলা কষ্টকর হয়। ফরজ গোসল করা কষ্টকর  হয়ে যায়। দাম্পত্য সুখের প্রকৃত মহিমা অজানা থেকে যায়। নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।


এ সকল কারণে সাম্প্রতিককালে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে খাৎনা করার হার বেড়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে গত দশকে আমেরিকায় খাৎনা করার হার তার পূর্ববর্তী দশকের চাইতে ৩০% বেশি ছিলো। অথচ আমাদের মতো মুসলিম প্রধান দেশের অনেক মানুষ খাৎনার বিরুদ্ধে কথা বলে। তাদের উচিৎ খাৎনা তথা মুসলমানীর উপকারিতা সম্পর্কে জানা।



1 টি মন্তব্য: